Food

আপনি কেন আদা খাবেন ?? New Health Tips 2023

আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।

4.7/5 - (4 votes)

আপনি কেন আদা খাবেন ??

কারন আদা আমদের সুপরিচিত একটি ভেষজ উপাদান । আদা খাবারে স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের দেহের সুস্থতার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এইজন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় আদাকে বলা হয়ে থাকে বিস্ময়কর উপাদান। এটি মূলত তরকারি বা মসলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয় । গুরুত্বর রোগের ক্ষেত্রেও, সাধারণ ও সুপরিচিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খুব চমৎকার কার্যকরী। এছাড়াও নিয়মিত আদা খাওয়ার অসাধারণ উপকারীতা রয়েছে। শীতে সর্দি-কাশিকে দূরে রাখতে খেতে পারেন আদা। আদা আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগকে দূরে রাখবে। রান্নায় স্বাদ বাড়াতে আদা যেমন কাজে লাগে তেমনি অসুখ সারাতে আদার জুড়ি নেই। যেভাবেই খান না কেন এটি কিন্তু একটি উপকারি খাদ্যবস্তু । চলুন আজ আমরা আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নি।

 

আদা খাওয়ার উপকারিতা

 

১) হালকা কাশি ও গলা ব্যথায় ।

হালকা কাশি ও ঠাণ্ডায় সবচেয়ে সহজ ও উত্তম সমাধান হল  আদা। এটি খেলে খুব দ্রুতই কাশি কমতে শুরু করে । কাশি বা গলা ব্যথা বেড়ে গেলে এক টুকরো আদা গরম পানি বা চায়ের সাথে খেয়ে নিন। আশা করি ফল পাবেন, কারন এটি একটি প্রাকৃতিক বেদনা বা ব্যথা নাশক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি এটি ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে। শীত যাদের গলা খুশখুশ, নাক বন্ধ, নাকের-চোখের পানি একসার তারা জিভের তলায় বা গালে রেখে দিন আদার টুকরো। আদার ঝাঁঝাঁলো রস গলায় গেলেই আরাম পাবেন।

২) পেটের সমস্যা বা অ্যাসিডিটির ( গ্যাস্ট্রিক ) এর সমস্যায় ।

বিভিন্ন ধরনের খাবার খেলে অনেক সময় অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সমস্যার ঘরোয়া উৎকৃষ্ট উপায় হল আদা খাওয়া । অ্যাসিডিটির সমস্যা শরীরের জন্য বেদনাদায়ক ও অস্বস্থিকর ।  আদা পেটের পেশী শিথিল করে ফলে  গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দূর হয় । বাড়ি হক বা কোন অনুষ্ঠানে মজাদার খাবার রান্নায় আদা বাটা কিংবা আদা কুঁচি আবশ্যি একটি মশলা। খাদ্য পরিপাকের জন্য ভীষণ উপকারী এই উপাদানটি হরহামেশাই ব্যবহার করা হয় না জেনেই । গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চা বা অন্য খাবারের সঙ্গে বা অন্য কোনোভাবে নিয়মিত আদা খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা নির্মূল হয়।  আদার রস হতে বাইল রস (Bile juice) নিঃসরণ করে। যা খাদ্য দ্রুত ও সহজে হজম হতে কাজ করে। তাই গ্যাস্ট্রিক বা পেটের সমস্যায় আপনি নিয়মিত আদা খেতে পারেন।

৩) অ্যালার্জি বা চুলকানির প্রকোপ কমায় ।

বেশীরভাগ মানুষ ধুলাবালি, রেণু, ময়লা ও দূষিত বাতাসে  এমনকি বংশীও কারনেও অ্যালার্জির সমস্যার মুখোমুখি হন। অ্যালার্জির কারনে পছন্দ অনুসারে কোন খাবার খেতে পারেন না । যেমন চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, হাঁসের ডিম, কচু ইত্যাদি । এই ধরণের অ্যালার্জিকে সাধারণত ডাস্ট অ্যালার্জি বলা হয়ে থাকে। একবার এই ধরনের খাবারের কারনে অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে বেশ লম্বা সময় ধরে ভুক্তভোগীকে অসুস্থ থাকতে হয়। শরীরে বিভিন্ন যায়গায় ছোট ছোট রেশ দেখা দেয় ।  এক্ষেত্রে কাঁচা আদা চিবিয়ে, চায়ের সাথে অথবা আদার শরবত তৈরি করে পান করলে অ্যালার্জির সমস্যা অনেকটা কমে যাই । আদাতে থাকা অ্যান্টি-হিস্টামিন উপাদান অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব তাৎক্ষনিকভাবে কমিয়ে আনে এবং ভুক্তভোগীকে সুস্থ করে তোলে ।

৪) বাতের ব্যথা , পিরিয়ড ( মাসিক )এর ব্যথা ও মাইগ্রেনের সমস্যায় ।

আদাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম আর এই ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে । যার ফলে বাতের ব্যথা দূর হয় ।  আদার মধ্যে থাকা প্রদাহ কমানোর উপাদানের জোরেই বাতের ব্যথা ও পেশির ব্যথা থাকে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে তলপেটে প্রচন্ড ব্যথাভাব দেখা দেওয়া খুবই সাধারণ একটি লক্ষণ। শরীরে কোন প্রদাহ দেখা দিলে, ফোলাভাব তৈরি হলে কিংবা ব্যথাভাব দেখা দিলে আদা গ্রহণে তাৎক্ষনিক উপশম পাওয়া সম্ভব হয়। বিরক্তিকর ও কষ্টদায়ক এই ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে আদা চা পান করলে ব্যথা কমে যায় । তাই যে যাদের বাত ব্যথা বা পিরিয়ড এর সময় তলপেটে ব্যথা হয় তারা নিয়মিত এটি খান । এতে আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন ।

৫) ক্যান্সারের হওয়া ও হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে ।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আদা ক্যান্সার ও হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধে আদা উপকারী। এটি রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে । যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় । ওষুধ হিসেবে আদা গ্রহণ করলে ফুসফুস, প্রোস্টেট, ওভারিয়ান ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রক্ষা  পাওয়া সম্ভব। তাই নিয়মিত আদা খেলে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় ।

খালি পেটে নিয়মিত রসুন খেলে যে কয়টি রোগ আপনার কখনো হবে না ।

৫)  বয়সের ছাপ কমানো ও ত্বক-চুল উজ্জল রাখতে ।

প্রচণ্ড কাজের চাপ,  চিন্তা, ব্যস্ততা এসবের জন্য অল্পবয়সেই মুখে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকে। আদার মধ্যে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ভিটামিন, যা শরীরকে নির্বিষ করে। একই সঙ্গে দেখভাল করে চুল-ত্বকেরও। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-এজিং উপাদান আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান টক্সিন বের করে দেয়। এর ফলে আপানার থাকে সবসময় লাবণ্যময় । কাঁচা আদা খেতে প্রথম দিকে কষ্ট হলেও অভ্যাস করে তুলুন।

খাওয়ার নিয়ম

আদা একটি ভেষজ ওষধি খাবার । এটি আপনি কাঁচা বা রান্না করে খেতে পারেন । রান্না করে আমরা প্রায়ই আদা খেয়ে থাকি কিন্তু রান্না করে খেলে সামান্য উপকার পাওয়া যায় । এর উপকার পেতে হলে লিকার চা বা ছেঁচে বা পিষে রস করে খেতে হবে। আবার ছেঁচে বা পিষে রস ফ্রিজে রেখে দিলে এর ওষধি  গুন নষ্ট হয়ে যায় ।  তাই এটি টাটকা খেলে ফল ভালো পাওয়া যাবে ।

আদা একটি দারুণ উপকারি খাদ্য উপাদান । এর রয়েছে নানাবিধ উপকার ঠিক তেমনই আছে কিছু অপকারিতাও । আদার প্রচুর পরিমানে ওষধি গুন  রয়েছে , তার মানে এই না আপনি প্রচুর পরিমানে আদা খাওয়া শুরু করবেন । আসুন যেনে নি কোন অবস্থায় আদা খাওয়া যাবে না।

  • আদা বেশি খেলে ডায়রিয়া , পেট ব্যথা এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • এটি পরিমানের চেয়ে বেশি খেলে ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে, যা বড় ক্ষতির কারন হতে পারে।
  • আদা চা বেশি খেলে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে ।
  • এটি শরীরে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে , তাই গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া উচিৎ নয়।

শুধু আদাই নয় যেকোনো খাবার অতিরিক্ত খাওয়া উচিৎ নয় । দরকারের চেয়ে বেশি খেলে কোন কিছুই আর উপকারি থাকে না । তাই আমরা যাই খাই পরিমান মত খাওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া বেশি বেশি পানি খাওয়ার অভ্যাস করবো।  আরও পড়ুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button